হাসনাইন খুরশেদ শুচি
সেদিন যখন খুব বৃষ্টি পড়ছিলো
সামনের গ্লাসে ব্যস্ততায় ছুটছিলো ওয়াইপার
তুমি তখন জানালার কাঁচে মুখ রাখলে..
প্রবল বারিধারায়-
ভিজে যাচ্ছে রাজপথ
ভিজে যাচ্ছে দু’পাশের দোকানপাট
গাছে গাছে পাখিরা ভিজছে অকাতরে
কাকভেজা মানুষের ঠাঁই দোকানের অন্দরে।
তুমি জানালায় রেখেছো তোমার গোলাপি গাল
কি মুগ্ধতায় বৃষ্টি দেখছো
বৃষ্টির ফোঁটারা পৃথিবী ভেজাচ্ছে
জানালার কাঁচে আছড়ে পড়ছে
তোমাকে ছুঁতে পারছে না.. তুমি ভিজছো না..
তুমি কি আসলেই ভিজে যাচ্ছো না!
আড়চোখে তাকিয়ে দেখছি-
ভিজে যাচ্ছে তোমার হৃদয়
অবিরাম বর্ষণে ভিজতে ভিজতে
তেইশ পেরিয়ে পা রাখছে চব্বিশে..
তুমি বললে, গাড়িটা থামাও
ইশারা-বাতি জ্বেলে-
আমি বাঁয়ে সরিয়ে আনলাম গাড়ি
গলি বেয়ে নেমে পরলাম গহীন অরণ্যে
দরোজা খুুলে তুমি নেমে গেলে..
সিক্ত সবুজের অরণ্যে নেমে গেলে..
স্টিয়ারিংয়ে হাত রেখে দেখছি-
ভিজে চুপচুপে হচ্ছে তোমার সোনালী শাড়ি
ভেজা চুল ছড়িয়ে পরছে তোমার মায়াবী মুখে
আমি নেমে এসে হাত রাখলাম তোমারই হাতে
শিরায় শিরায় বয়ে..
পৌঁছে গেলাম তোমার হৃদয়ে..
দেখলাম, সেখানে বসে আছে আরেকজন!
অবিকল আমারই মতোন!
আমার মতোন ঠিক বলা যাবে না
তারুণ্যদীপ্ত তেজী সেই তরুণ
মাথা ভরা ঝাঁকড়া কালো চুল
ওর স্বপ্নময় চোখে-
তুমি.. কেবলই তুমি..
আমি বললাম, ছেলেটাকে চেনা চেনা লাগছে!
তুমি বললে, ও তো এখানেই থাকে..
চব্বিশ বছর ধরে এখানেই বসে আছে।
বাঁ হাতে শুভ্র-সাদা চুল সরিয়ে
চশমাটা ঠিকঠাক করে
আমি আবার তাকালাম-
আসলেই তো খুব চেনা!
এ আমি কাকে দেখছি!
চমকে বললাম, এ তো আমি! আমার যৌবন!
তুমি বললে- সেই তুমি.. এই তুমি..
একই তো তুমি।
Leave a Reply